কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত এ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটটি গত তিন মাস ধরে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উত্পাদন করছে এবং এখন বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মওলা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ইউনিটটি তৈরি আছে। আমরা শিগগিরই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার বাংলাদেশ উন্নয়ন বোর্ডের (পিবিডিবি) কাছে আমাদের প্রস্তাব পেশ করব।’
রাষ্ট্রায়ত্ত নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বিসিপিসিএল এ প্রকল্পটি স্থাপন করেছে।
পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় পাঁচ মাস ধরে চালানোর পর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি এ বছরের মে মাসে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে।
এ কেন্দ্রের উভয় ইউনিট একযোগে পরিচালনা করার অনুমতি দেয়া হলে এ থেকে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উত্পাদন করা সম্ভব হবে। যা দেশের বিদ্যুত খাতে এক নজির স্থাপন করবে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উত্পাদিত হয়েছে।
সম্প্রতি যদিও পাওয়ার ট্রান্সমিশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) পায়রা বিদ্যুত প্রকল্প থেকে বিদ্যুত স্থানান্তরের সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি সঞ্চালন প্রকল্প নিয়েছে, তবে একই সাথে দুটি ইউনিটের পরিচালনার অনুমোদন পাওয়ার বিষয়ে আশা করছেন না কর্মকর্তারা।
সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এর কারণ হলো ট্রান্সমিশন লাইনগুলো এখনও একই সময়ে সমানতালে চলার মতো করা হয়নি এমন পরিস্থিতিতে আমরা দুটি ইউনিটের বিকল্প পরিচালনার দিকেই যাব।’
সঞ্চালন প্রকল্পগুলোর মধ্যে- পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিটের ১৬০ কিলোমিটার লাইন, আমিনবাজার-মাওয়া-গোপালগঞ্জ-মোংলা ৪০০ কেভি ১৬৪.৬ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট লাইন এবং পদ্মা সেতুর কাছে ৯.৪ কিলোমিটার নদী-পারাপার লাইন স্থাপন।
পিজিসিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পায়রা ও রামপালের উভয় কেন্দ্র থেকেই বিদ্যুত স্থানান্তরের লক্ষ্যে এ সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং যার ব্যয় হবে প্রায় ৪ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে, পায়রা কেন্দ্রের সঞ্চালনেই ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।
তবে পদ্মা সেতুর নিকটবর্তী ৯.৪ কিলোমিটার নদী-পারাপার লাইনের কাজ প্রত্যাশিত গতিতে আগানোর ফলে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সব বিদ্যুত সরিয়ে নেয়ার কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘কোভিড-১৯ কারণে পায়রা-সংযুক্ত সব ট্রান্সমিশন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।’